কাচভাঙা রাতদিনের মর্সিয়া

‘কোনো কোনো মৃত্যু হয় পাহাড়ের মতো ভারী, আর কোনো কোনো মৃত্যু হয় পাখির পালকের মতো হালকা।’ মহামতি মাও সে তুং-এর বলা এই কথাটির সত্যাসত্য জীবন-পথপরিক্রমায় হাড়েমজ্জায় অনুভব করেছি। অত্যন্ত কাছের মানুষের মৃত্যু অবলোকন করা আর নিজে মরে যাওয়া বুঝি-বা একই সমান্তরালে চলে।

২০০২ সালে আব্বাকে যখন কবরে শুইয়ে এলাম, বুঝতে পারছিলাম না, আমি বেঁচে আছি নাকি মরে গেছি! এই পৃথিবীর সবচাইতে প্রিয় মানুষকে চোখের আড়াল হতে দেখার মতো অসহ-কষ্টের তুলনা কীসের সঙ্গে বা কীভাবে দেওয়া যায়, আমি জানি না। এটুকু বলতে পারি, যে হারিয়ে গেল, দৃষ্টির আবডালে চলে গেল, তাঁর সঙ্গে আমার তফাৎ শুধু এটুকুই – মাটির ওপর আর নিচে থাকার। সে আছে চিরনিদ্রায় মাটির আড়ালে, কবরের অন্ধকারে। আর ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত হৃদয় নিয়ে আমি আছি মাটির ওপরে, কবরের বাইরে। ব্যাস! এটুকুই তো! শুধু এটুকুই। এর চাইতে আর কী কমবেশি হতে পারে!

সদ্য প্রয়াত হলেন আমাদের 888sport live footballের যথার্থ শিক্ষিত ও স্মার্ট লেখক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এমেরিটাস অধ্যাপক, সকলের প্রিয় এসএমআই। সকলের প্রিয় শিক্ষক এসএমআই, কিন্তু আমার সরাসরি শিক্ষক নন তিনি। অথচ তাঁকে আমি বরাবর ‘স্যার’ই ডেকেছি। 888sport live footballের বন্ধুর পথে চলতে এসে এই ‘স্যার’ সম্বোধন করি আমি হাতেগোনা দু-চারজন মানুষকে। তাঁদের ব্যক্তিত্বের বিভায় নিজেকে তৃণসম মনে হয়। যাঁদের দেখলে পুনরায় শিক্ষানবিশ হওয়ার জন্য বড় সাধ জাগে। একদা যে-জীবন দোয়েলের, ফড়িংয়ের ছিল, সেখানে আর ফিরতে না-পারার জন্য বড় আফসোস হয়।

এসএমআইকে দেখে আমার তেমনই মনে হতো। মনে হতো এখুনি স্যারের ক্লাসরুমের ফার্স্ট বেঞ্চে বসে পড়ি (চিরকালই ফার্স্টবেঞ্চার ছিলাম কি না)। আর সামনে খুলে রাখি নোটখাতা। হাতে বলপয়েন্ট নিয়ে অপেক্ষায় থাকি লেকচার টুকে নেওয়ার।

যদিও তাঁর ক্লাস করার সৌভাগ্য না হলেও বহু বক্তৃতা শোনার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। মন্ত্রমুগ্ধের মতো বসে বসে শুনেছি অত্যন্ত স্মার্ট, বাগ্মী এই শিক্ষকের বক্তৃতা।

সর্বশেষ স্যারের দীর্ঘ বক্তৃতা শোনার সৌভাগ্য হয়েছিল বিগত ২০২৩ সালের ১১ই জুলাই। বেঙ্গল 888sport live chatালয় আয়োজন করেছিল ‘আবুল হাসনাত স্মারক বক্তৃতার’।

মূল বক্তা হিসেবে এমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আমাদের আলোকিত করেছিলেন ‘সংস্কৃতির বিপন্নতা, সংস্কৃতির শক্তি’ বিষয়ক জ্ঞানগর্ভ আলাপের মাধ্যমে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্যারের অসুস্থ হওয়ার নিউজ দেখেও এড়িয়ে যেতে চেয়েছি। ভালো করে পড়তে চাইনি। কারণ বহুদিন ধরেই আমি এককোণে একটি বৃষ্টিফোঁটার মতো পড়ে থাকতে চাই। বহুদিন ধরে বহুকিছু থেকেই পালিয়ে বেড়াই। যা-কিছু বহন করতে গিয়ে ভেঙে চুরচুর হতে হয়, তা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখি। লুকিয়ে থাকি অন্ধকারের ভাঁজে। এতটাই নড়বড়ে ও ভয়ার্ত আমার মনোভূমি।

কিন্তু ওই নিউজে মনোনিবেশ না করলেই কী! তাতে কি আমি আটকাতে পারি প্রিয় মানুষের মৃত্যু? কিংবা এরকম পালিয়ে বেড়ানোতে কি আমার মুক্তি মেলে? দহন থেকে পরিত্রাণ পাই এক নিমেষের জন্যও? আমার মতো ক্ষুদ্রজীব, যে কোনোকিছু দিয়ে কিছুই আটকাতে পারে না।

ধসে পড়ে এক বিশাল পাহাড়। বাতাস ভারী হয়ে মৃত্যু নেমে আসে। 888sport appsের মানুষ হারিয়ে ফেলে তাঁদের অত্যন্ত মেধাবী একজন শিক্ষককে। হারিয়ে ফেলে যথার্থ শিক্ষিত ও স্মার্ট একজন লেখককে। মানবিক একজন মানুষকে।

‘হায়। এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর …’

টানা তিন-চারদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হোমপেইজ স্ক্রল করতে গিয়ে বারবার থমকে যায় হাত। ফের উপলব্ধি করি, কেন পাহাড়ের মতো ভারী হয়ে যায় কোনো কোনো মানুষের মৃত্যু। যেন-বা কোনো বড়সড় পাহাড় বুকের ওপর ধসে পড়েছে। আমরা মাটিচাপা পড়ে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় পতিত হয়েছি। আর বাঁচার জন্য আকুলিবিকুলি করছি।

কে যেন দুশমনি করে অজস্র কাচের গুঁড়া ছিটিয়ে দিয়েছে সেই ভারী বাতাসে। ফলে ত্বক ভেদ করে একেবারে হাড়ের গভীরে জেগে উঠছে প্রগাঢ়-বেদনা। বাতাসের ধার লেগে বৃক্ষের সবুজ পাতা ঝরে পড়ছে। ওরা ঝরছে বড় অসময়ে।

আহ! স্যার! এরকম বুকভার করা মৃত্যু! এরকম পাহাড় ধসে যাওয়া মৃত্যু! কত জনের কত অযুত-নিযুত কথামালা আপনাকে নিয়ে! কত কান্না, 888sport sign up bonus, কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ! কী যেন আমাদের ছিল! কে যেন ছিল বড় আপনার! আজ সে নেই! আজ সে কোথাও নেই!

সমস্তই করুণতম সংগীত হয়ে বেজে চলে। বেজেই চলে!

Die happily and look forward to taking up a nwe and better form. Like the sun, only when you set in the west can you rise in the east. – Rumi

স্যার, আপনি হলেন সেই মানুষ, দেহাবসান হলেও যিনি চিরঞ্জীব!

দুই

১৯৯৮ সালের দিকে পাঠক সমাবেশ থেকে প্রকাশিত হলো সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের গল্পগ্রন্থ কাঁচ-ভাঙা রাতের গল্প। তাঁর সঙ্গে এই বই প্রকাশের আগেই আমার যোগাযোগ ঘটেছিল। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় স্যারের গল্প পড়ছিলাম আগ্রহ নিয়ে। আমি তখন বাংলা একাডেমিতে তরুণ লেখক প্রকল্পে লেখালেখি বিষয়ক কোর্স করছি। আজিজ সুপার মার্কেটে ছিল নিত্য আসা-যাওয়া। ফলে বইটি কিনতে বিলম্ব ঘটেনি। সেই থেকে স্যারের লেখার একাগ্র-পাঠক হয়ে উঠলাম। এক-একটা গল্প পড়ে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে থেকেছি। দৈনিক সংবাদের 888sport live football সম্পাদক তখন আবুল হাসনাত। হাসনাতভাইয়ের 888sport live football পাতায় স্যারের একটা দুর্দান্ত গল্প পড়লাম। নাম ‘ডিডেলাসের ঘুড়ি’। গ্রিক পুরাণের ডিডেলাস পুত্র ইকারুসকে মোমের ডানা লাগিয়ে ভাসিয়ে দিলো আকাশে। যাও বাছা যাও, উড়িবার স্বাদ নাও। মুক্তির আনন্দ নিয়ে ফিরে এসো ফের। পুত্রকে ভাসিয়ে দিয়ে নিচে দাঁড়িয়ে আনন্দে হাততালি দিলো বাবা। পুলকিত ইকারুস নির্ভার ভেসে বেড়াল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আকাশে দেখা দিলো সূর্যদেব। মোমের ডানা কী করে অক্ষত থাকে সূর্যের নিচে? ফলে সূর্যের প্রখর তাপে গলতে শুরু করলো ইকারুসের ডানা।

888sport appsীয় আবহে লেখা স্যারের এই গল্পটি আমাদের একেবারে বিস্মিত করে দিলো। কীভাবে কেউ লিখতে পারে এরকম গল্প?

দিন কয়েক বাদে স্যারের সঙ্গে কোনো এক অনুষ্ঠানে দেখা হলে জানতে চাইলাম, এমন আশ্চর্য গল্প তিনি কীভাবে লিখলেন? কী করে সম্ভবপর হয় এমন গল্প বোনার কায়দা?

স্যার সামান্য হেসে জানালেন, ‘সংবাদ পত্রিকায় প্রায়ই নানা বাস্তব ঘটনাচিত্র ছাপা হয়। খেয়াল করলে তুমিও পেয়ে যাবে এরকম অসংখ্য গল্প। তুমিও লিখতে পারবে এরকম গল্প।’

স্যারের কথা শুনে আমি হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। এমন বিনয়ী একজন মানুষ! কত সহজে আমাকে গল্প লেখার কলকব্জার সন্ধান দিয়ে দিলেন! বাতলে দিলেন কীভাবে নির্মাণ করা যায় গল্পের নকশা?

অহংকারের চিহ্নমাত্র নেই তাঁর মুখাবয়বে! কোথাও কোনোভাবেই উচ্চকিত নন তিনি!

চিরকালই আমি সবার ছাত্র। শিখছি-পড়ছি দিবারাত্র, নেই দ্বিধালেশ মাত্র!

এরপর পড়লাম ‘রেশমী রুমাল’, ‘জিন্দালাশ’, ‘ইবনে বতুতার দিনপঞ্জি’, ‘যুদ্ধযাত্রা’, ‘প্রেম’ ইত্যাদি আরো কিছু ধ্রুপদী গল্প।

মনজুর স্যারের বই প্রকাশ হওয়া মাত্রই, নতুনের ঘ্রাণমাখা সে-বই আমি সংগ্রহ করেছি। অতঃপর আমার লাইব্রেরির সেলফে যত্ন করে তুলে রেখেছি। সময়-সুযোগ বুঝে প্রায় বইতেই নিয়ে রেখেছি স্যারের সিগনেচার, অর্থাৎ মূল্যবান অটোগ্রাফ।

আদতে মনজুর স্যারকে আমি সিরিয়াসলিই পড়ছিলাম।

এরই মধ্যে লোক পত্রিকা স্যারকে নিয়ে বিশেষ 888sport free bet করবে বলে জানাল। সম্পাদক অনিকেত শামীম অনুরোধ জানাল স্যারের যে-কোনো একটা বই নিয়ে আমি যেন আলোচনা করি। আমিও মহানন্দে সম্মতি দিলাম। কারণ স্যারের বই নিয়ে লিখতে আমি নিজেও ছিলাম আগ্রহী এবং লিখতে পারাটা সৌভাগ্য বলেই বিবেচনা করেছি।

প্রেম ও প্রার্থনার গল্প নিয়ে আমি একটি নাতিদীর্ঘ আলোচনা লিখলাম লোক পত্রিকায়।

বইয়ের প্রতিটি গল্প ধরে ধরে প্রায় চুলচেরা আলোচনা করলাম আমি। স্যারের লেখার কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে বললাম – ‘সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের গল্পের প্রধান লক্ষণীয় বিষয় লেখকের কথনশৈলী। যার মধ্যে কোনো ঘোরপ্যাঁচ নেই। সরল-সিধা-সাদা-সোজাসাপটা বাক্য, অহেতুক কোনো জটিলতা নেই। দেখানেপনা নেই। অথবা পণ্ডিতি জাহির করার লিপ্সা নেই। এমন সরল-সাদা বাক্য যেন বিস্তীর্ণ আকাশ থেকে অঝোর ধারায় ঝরে পড়ছে জল। সোজা-সরলভাবে। এবং ওই পড়ন্ত জলরাশির ভেতর ঢুকে পড়ছে আরো লক্ষকোটি জলকণা, যা সৃষ্টি করে চলেছে বিমূর্ত চিত্রকলা। এই লক্ষকোটি জলকণা হলো 888sport live chatচাতুর্য। 888sport live chatগুণ-সমৃদ্ধ-সরলতা যা জন্ম দিচ্ছে গল্পের ভেতর গল্প। এবং এই জলপতন ক্লান্তিকর নয়। বরং সংগীতমুখর, যা নিউরনে নতুন সুর ধ্বনিত করে দেয়। কী নেই তাঁর গল্পে? বোমা ফাটানোর ঘটনা থেকে শুরু করে বানভাসি মানুষ সবই চলচ্ছবির মতো একে একে দৃশ্যপটে ভেসে ওঠে।

গল্পের বিষয়-বৈচিত্র্যের যে-রত্নভাণ্ডারের সঙ্গে তিনি পাঠককে পরিচয় করিয়ে দেন, তাতে তাঁর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতায় রীতিমতো চমকে উঠতে হয়। সেইসঙ্গে বুকে সাহস জাগে, এরকম একজন গল্পলেখক আছেন আমাদের সঙ্গে! জীবনবাস্তবতা, জীবনবোধ, প্রেম, অপ্রেম, প্রার্থনা, পুরাণ, অসহায়তা, ইতিহাস, লোককথা, লোকজীবন, রাজনীতি, ধর্ম, কুসংস্কার সবই তাঁর গল্পের উপাদান। তাঁর কলম যেন টাইমট্র্যাক্স যা আকীর্ণ ভূগোলকে নিয়ন্ত্রণ করে চলে …।’

লোক পত্রিকার ওই বিশেষ 888sport free betটি প্রকাশের পর স্যারের সামনে যেতে আমার ভারি সংকোচ বোধ হতো। স্যারের লেখাপত্র নিয়ে কথা বলার মতো যোগ্যতা আমি অর্জন করেছি কি না – এই দ্বিধা ও লজ্জা আমাকে একেবারে মলিন করে তুলত।

পরবর্তী সময়ে কথা888sport live footballিক মাসউদ আহমাদ-সম্পাদিত গল্পপত্র পত্রিকাটিও স্যারকে নিয়ে একটি বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। কিন্তু পারিবারিক প্রচুর ঝামেলার কারণে স্যারকে নিয়ে কোনো নতুন লেখা লিখতে আমি ব্যর্থ হই। ওই লিখতে না-পারা আমাকে আজো কাঁটার মতো বিদ্ধ করে।

নতুন লেখা দিতে অপারগ হলেও সম্পাদক মাসউদ আহমাদ আমার পূর্বের লেখাটিই বড় যত্ন করে গল্পপত্রের ষষ্ঠ 888sport free bet, মার্চ, ২০১৫ সালে রিপ্রিন্ট করেন।

তিন

এক মানুষের সঙ্গে অন্য মানুষের যোগসূত্র কখন, কেন বা কীভাবে তৈরি হয় বলা মুশকিল। কোন রহস্যে কোন অপর কীভাবে ও কেন নিকট থেকে নিকটতর হয় – সেসবের সূত্র জানা যায় না। আমার কাছে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক হলো জলের মতো স্বচ্ছ ও তরল! কোথাকার জল কোথায় গড়িয়ে গড়িয়ে কোনো এক অজানা মহাসমুদ্রে মিলিত হয়। অন্যভাবে বলা যায়, এই সম্পর্ক হলো পথের মতো। সব পথই হারিয়ে, ছাড়িয়ে, ঘুরেফিরে, রক্তাক্ত হয়েও কোনো-না-কোনো গন্তব্যে হয়তো পৌঁছে যায়। আদতে পথকে পৌঁছাতে হয় কোথাও না কোথাও।

মনজুর স্যারের সঙ্গে দিল্লি, লখনৌ বা চণ্ডীগড় 888sport slot gameের সুযোগ হয়েছিল সার্ক লিটফেস্টে অংশগ্রহণের কল্যাণে। স্যারকে খুব কাছ থেকে দেখা বা জানার সুযোগ পেয়েছিলাম তখন। স্যার ছিলেন সদা আন্তরিক, হাস্যোজ্জ্বল ও আশীর্বাদদাতা।

নানাবিধ আলাপের মধ্যে একদিন স্যারকে বললাম, আমি সিলেট পাইলট গার্লসের ছাত্রী ছিলাম। স্যার জানালেন, তাঁর আম্মা ওই স্কুলের টিচার ছিলেন। নাম রাবেয়া খাতুন।

আচানক আমার শৈশবের বদ্ধ-জানালার কপাটগুলি খুলে যায়। জানালা খুলে গিয়ে অতীতের অজস্র দৃশ্য হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ল।

ক্লাস ফোর বি’র ক্লাসটিচার আমাদের বাংলা পড়াতেন। তাঁর পরনে থাকত ধোপাবাড়ি থেকে সদ্য আনা পাটভাঙা ধবধবে সাদা শাড়ি। কালো-সরু পাড়। সাদা শাড়িতে আঁবের হালকা সাদা-ঝলক। প্রচণ্ড গৌর আমাদের ক্লাসটিচারের মুখাবয়ব একেবারে দেবীর মতো। পান-খাওয়া লাল টুকটুকে ওষ্ঠযুগল। চোখে মোটা কালো ফ্রেমের চশমা। হাতে রেজিস্টার খাতা।

রোলকলের পর হোমওয়ার্কের খাতা জমা দিয়ে ক্লাসওয়ার্ক শুরু করা।

কিন্তু আমি বুঝতে পারি না, আমার ক্লাসটিচারের নাম কী? কারণ আমার প্রতিটি ক্লাসওয়ার্কের খাতার মার্জিনে লেখা থাকে ওপরে ‘ভালো’। নিচে ‘রাখা’।

একদিন আব্বা জানতে চান – পাপড়ি তোমার ক্লাসটিচারের নাম কী?

আমি বলি – ভালোরাখা।

আব্বা চমকান। বলেন – ভালোরাখা? কই, যাও তো খাতা নিয়ে এসো।

আমি খাতা নিয়ে এলে আব্বা হাসতে হাসতে বলেন – তোমার ক্লাসটিচারের নাম ভালোরাখা নয়। তুমি রোজ ক্লাসে ভালো করো মানে গুড পাও, তাই ভালো লেখা থাকে। আর ‘রাখা’ মানে রাবেয়া খাতুন।

আব্বার কথা শুনে আমি লজ্জিত হই। নিজের বোকামুখ লুকানোর জন্য ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে থাকি।

আমি মনজুর স্যারকে ‘ভালোরাখার’ কাহিনি বললে স্যার উচ্চশব্দে হেসে ওঠেন।

নিজেকে দারুণ সৌভাগ্যের অধিকারী বলে মনে হয়। এরকম গুণী একজন মানুষের মায়ের কাছে আমি 888sport live football পড়েছি!

কোন যোগসূত্রে বাঁধা পড়ে মানুষ? কীভাবে বা কোন সূত্রে একে অন্যের নিকটজন হয়ে ওঠে? এসবই নতুন করে ভাবনার বিষয় বলে মনে হয়।

এবং স্যারের সঙ্গে আমার সেই 888sport sign up bonusপুষ্পের মালিকা এত দ্রুতই গাঁথতে হবে আমি কিন্তু দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি।

ভাবিনি, জীবনের যা-কিছু সঞ্চয় তার সবই একদিন কতই না মূল্যবান হয়ে ওঠে!

অলস দিনের হাওয়া এসে কীভাবেই না আমাদের এমন বিষণ্ন করে দিয়ে যায়!

‘কোনো শীতরাত্রিতে ঝড়েজলে বিধ্বস্ত বিপর্যস্ত শীতাতুর চড়ুই যেমন আলোকিত উষ্ণ এবং সংগীতমুখর একটি ঘরের জানালা দিয়ে ঢুকে কয়েক মুহূর্ত ওড়াউড়ি করে অন্য একটি জানালা দিয়ে নিষ্ক্রান্ত হয়, সেরকম ক্ষণস্থায়ী, শুরু না হতেই শেষ বস্তু হচ্ছে জীবন।’

জীবনের অপর্যাপ্ততা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে গিয়ে সেইন্ট অগাস্টিনের এই দর্শনের সঙ্গে যিনি একাত্মতা ঘোষণা করে গেছেন কেমন হতে পারে তাঁকে নিয়ে গল্প?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সঙ্গে লিটফেস্টে কাটানো দুর্লভ দিনগুলোর সেরকম গল্পই কি বলতে চাইছি আমি?

চার

মনজুর স্যারের সঙ্গে আমার দেখা হতো 888sport live football অনুষ্ঠানগুলোতেই। স্যারের দৃষ্টি যথারীতি স্নেহময় ও সরল হাসিতে উদ্ভাসিত।

কত 888sport sign up bonus আর কত গান, কত প্রাণসঞ্চারী ঘটনা আমাকে যে ঋদ্ধ করে গিয়েছে, আজ লিখতে গিয়ে সেসব ফুরোতে চায় না। অন্ধের মতো হাতড়ে বেড়াচ্ছি গল্পকথার সুতা। কোথা থেকে গল্প বুনব বুঝে উঠতে পারছি না। বুনতে শুরু করলেও কোথায় গিয়ে থামতে পারব – সেটাও তো স্থির জানি না। এ এক বিষম ফ্যাসাদ। শুরু বা শেষ খুঁজে খুঁজে হয়রান হয়ে যাওয়া।

‘গাঁথা’ সংগঠনে আমি যুক্ত ছিলাম প্রায় এক যুগের মতো। ‘গাঁথা’র ফাউন্ডার ড. নিয়াজ জামান 888sport promo codeদের লেখাপত্র বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে 888sport app download apk latest version করেছেন। 888sport promo codeদের দিয়ে 888sport app download apk latest version করিয়েছেন। সেসব 888sport app download apk latest version তিনি বই আকারে প্রকাশও করেছেন। বই প্রকাশিত হলে আয়োজন করেছেন বুক লঞ্চের। নিয়াজ আপা এসব বিষয়ে ছিলেন অত্যন্ত আন্তরিক।

ধানমণ্ডি ২৭-এর ইএমকে সেন্টারে সেরকম এক বুক লঞ্চে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এলেন বিশেষ অতিথি হয়ে। আমি পেছনের সারিতে চুপটি করে ঝরাপাতাটির মতো পড়ে আছি, অপেক্ষা করছি স্যারের মূল্যবান আলাপ শোনার জন্য। কিন্তু স্যার নির্দিষ্ট বই নিয়ে কয়েক কথার পরপরই আমার লেখা নিয়ে আলাপ শুরু করলেন। আমি তো শরমিন্দা হতে হতে চেয়ারের সঙ্গে মিশে একাকার। এদিকে যাঁর বই নিয়ে আয়োজন আমি দেখছি তিনি দৃষ্টির আগুনে ভস্ম করার অভিপ্রায়ে বারবার পেছন ফিরে আমাকেই দেখছেন। রুদ্র নিশ্বাস ফেলে বৈশাখি ঝড়ের মতো উড়িয়ে দিতে চাইছেন আমাকে।

আমি তো ভয়ে-সংকোচে এতটুকু হয়ে আছি। ভয়ানকভাবে বিব্রত।

মনজুর স্যার কি এসব তোয়াক্কা করার মানুষ? তিনি যেটা সত্য মনে করবেন, সেটা বলে যাবেন। যাবেনই এবং তিনি করলেনও তা-ই।

কোভিড মহামারি শুরু হওয়ার বছরখানেক আগের ঘটনা এটা।

অনুষ্ঠানের পর আমি কোনোমতে বলতে পারলাম – ‘স্যার, আপনার গল্পের মতো একটা গল্পও আমি আজ অবধি লিখতে পারিনি।’

স্যার হাসতে হাসতে সকৌতুকে বললেন – ‘নিজের লেখা নিয়ে লেখকের দোটানা থাকা ভালো ব্যাপার, পাপড়ি।’

পাঁচ

পৃথিবীর যে-কোনো প্রান্তে ছোট্ট একটি বিন্দুর মতো পড়ে

থাকতে চাই আমি। নিজেকে আড়াল করে, সমস্ত ডামাডোলের বাইরে থেকে নিজের লেখাটি লিখে যেতে চাই। কিন্তু মনজুর স্যার তা হতে দিলেন না।

888sport app লিটফেস্ট নাকি কী একটা প্রোগ্রামে বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম 888sport live footballবিশারদ অডিটোরিয়ামে স্যারের সঙ্গে আমার দেখা হলো।

আমি সালাম জানিয়ে পাশে দাঁড়াতেই স্যার আমাকে জানালেন, হাবিবুল্লাহ সিরাজী জানতে চাইলে আমি তোমার নামটিই বলেছি। এই মুহূর্তে তোমার চাইতে যোগ্য কাউকে আমার মনে হয়নি।

আমি ভয় ও সংকোচে জানতে পর্যন্ত চাইলাম না, স্যার কী বিষয়? বা কীসের কথা বলছেন আপনি? বা আমি কীসেরই-বা যোগ্য?

চুপ করে শুনে গেলাম শুধু।

দিন কয়েক বাদে বাংলা একাডেমির ডিজি হাবিবুল্লাহ সিরাজী আমাকে ফোন করে বললেন, ‘সা’দত আলি আখন্দ 888sport live football 888sport app download bdটি আমরা এবার আপনাকে দিতে চাই। এই 888sport app download bd দেওয়া মানে এই নয় যে, আপনি মূল 888sport app download bd পাবেন না। এখন আপনি চাইলে আমার এই প্রস্তাবে অসম্মতি জানাতে পারেন।’

আচানক এমন ফোনকলে কিংকর্তব্যবিমূঢ় আমি কী জবাব দেব বুঝে উঠতে পারলাম না। চকিতে মনে পড়ল, মনজুর স্যারের কথা। স্যার তাহলে এই 888sport app download bdের কথাই আমাকে বলেছিলেন?

হাবিবুল্লাহভাইকে আমি সম্মতি জানিয়ে দিলাম। শুনে তিনি হাসতে লাগলেন।

আমার দু-চারজন বন্ধু আপত্তি জানিয়ে আমাকে বললেন, আমি যেন এই 888sport app download bd গ্রহণ না করি। যেখানে আমাকে মূল 888sport app download bd দেওয়া উচিত, সেখানে আমি কেন এই 888sport app download bd নিচ্ছি?

কিন্তু আমি হাবিবুল্লাহভাই ও মনজুর স্যারকে মন থেকেই অত্যন্ত 888sport apk download apk latest version করতাম। এই দুই গুণী মানুষ আমাকে যা কিছুর জন্য মনোনীত করেছেন, সেটাই আমি আশীর্বাদ বিবেচনা করে মাথায় তুলে নিলাম।

আজ ওই দুই মানুষই হারিয়ে গিয়েছেন। আমি অশ্রুসজল চোখে তাঁদের কথা লিখছি। তাঁদের অকৃত্রিম স্নেহের কথা বলছি। এরকম অকপটে, অশ্রুসজল হয়ে আমি 888sport live footballাঙ্গনের আর কয়জনের কথা বলতে পারব? আদৌ পারব কি না জানি না।

লেখালেখির শুরু থেকেই আমি বহুবার ভেবেছি, বহু 888sport app download bd ও পুরস্কৃত লেখকের লেখাপত্র এক দশক থেকে অন্য দশক অবধিও দৌড়াতে পারে না। এতকিছু 888sport app download bd-পদক পাওয়ার পরও কেন তারা তা পারে না?

পারে না এজন্য যে, তাঁদের বেশিরভাগেরই উল্লেখযোগ্য লেখাপত্র থাকে না!

একজন লেখকের শেষ পারানির কড়ি হিসেবে থাকা চাই উত্তম টেক্সট। একমাত্র উত্তম টেক্সটই পারে বিপজ্জনক পুলসিরাত পার করে দিতে।

যদিও এমন ভাবি, তবু 888sport app download bdের সঙ্গে টাকাকড়ির বিষয়টি আমার কাছে বরাবর আকর্ষণীয় মনে হয়। গুচ্ছের টাকা পেলে আর যাই হোক কারো মন্দ লাগার কথা নয়।

ছয়

যিনি বা যাঁরা আমাকে জানেন বা আমার সামান্য লেখাপত্রের খোঁজখবর রাখেন, তাঁরা বলতে পারবেন যে, অনেক বেশি লেখা আমার দ্বারা সম্ভব হয়নি কোনোদিনই। ফলে বইয়ের 888sport free betও অপ্রতুল। বই কম বলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক 888sport apk download apk latest versionভাজন, প্রিয়ভাজনকে বই উৎসর্গ করা হয়ে ওঠেনি।

বইয়ের ডেডিকেশন অবশ্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন লেখকের জন্য। এত শ্রম, এত মেধা, এত ব্যয়িত সময় শুধু অত্যন্ত কাছের মনে না করলে বই ডেডিকেট করা প্রায় অসম্ভব।

২০২০ সালে প্রকাশিত আমার গল্পগ্রন্থ করুণ ক্যাসিনো ডেডিকেট করেছি মনজুর স্যারকে। উৎসর্গপত্রে কী লিখব তা নিয়েও দিনরাত ভেবে সারা হয়েছি। এই এক বিপদ! 888sport apk download apk latest versionভাজনদের নিয়ে কিছু লিখতে গেলেই হাত অবশ অবশ লাগে। কারণ কোনো শব্দে যদি তাঁদের মর্যাদা সামান্যতম ক্ষুণ্ন হয়!

তখনো করোনাকাল বর্তমান। বই প্রকাশের পর মনজুর স্যারকে ফোন করলাম। স্যার বললেন, ‘বিকেলে বাসায় চলে এসো।’

বলেই বললেন, ‘এখন করোনার টাইমে আসাও তো নিরাপদ নয়। তুমি এক কাজ করো, আমার বাসার ঠিকানায় কুরিয়ার করে দাও।’

স্যার আমাকে তাঁর বাসার ঠিকানা ফোনে মেসেজ করে দিলেন। আমিও বই পাঠিয়ে দিয়ে স্যারকে ফের ফোন করলাম।

স্যার জানালেন, বই পৌঁছায়নি। কারণ হিসেবে জানালেন, করোনার সময় বলে সব পার্সেল গেটকিপার রেখে দেয়। ওখান থেকে মিসিং হতে পারে।

কী আর করা? স্যারের হাতে পৌঁছানো গেল না আমার সামান্যতম নৈবেদ্য।

কয়েক মাস পর ফের বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম 888sport live footballবিশারদ মঞ্চ। আমার আরেক 888sport apk download apk latest versionভাজন স্যার সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর জন্মদিন। সংকোচে আড়ষ্ট হয়ে আমি মনজুর স্যারকে জানাই, ‘স্যার, বইটা আপনার হাতে দিতে চাই।’

স্যার বলেন, ‘দাও।’

আমি সুদৃশ্য মোড়ক খুলতে গিয়ে আঙুলে ফিতা জড়িয়ে ফেলি।

আমার বেহাল অবস্থা দেখে স্যার বলেন, ‘আরে আমাকে দাও। কতশত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছি। আমি এ-বিষয়ে এক্সপার্ট, আমার হাতে দাও।’

স্যার আমাকে অবাক করে দিয়ে খুলে ফেলেন মোড়ক! স্যারের হাতে কি জাদু আছে? নইলে পলকে কী করে উন্মোচন করলেন বইটি? যেমন তিনি যা কিছু লেখেন সবই পড়ে মনে হয়, জাদুকর ছাড়া এরকম লেখা কী করে সম্ভব হয়?

আমি বলি, ‘স্যার ছবি তুলে রাখি। এই মুহূর্তটি বড় দুর্লভ।’

সেখানে উপস্থিত থাকা কবি কামরুল হাসানকে বলি, ‘কামরুলভাই, স্যারের সঙ্গে আমার একটা ছবি তুলে দিন।’

সহৃদয় কামরুল হাসান হাসিমুখে ক্যামেরা তাক করেন। এই কাজে কোনো আলস্য নেই এই কবির।

ছবি তোলার পরপরই মুহূর্তটি অতীত হয়ে যায়।

রাতদিন ভাবনাচিন্তার পর করুণ ক্যাসিনোর ডেডিকেশনে আমি একটি বাক্যমাত্র লিখে উঠতে পেরেছিলাম –

    888sport apk download apk latest versionস্পদেষু সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

       প্রিয় লেখক, প্রিয় মানুষ …

স্যারের সঙ্গে এরপর বহুবার দেখা হয়েছে। কথা হয়েছে। স্যারের বলা প্রতিটি বাক্য আমি মন দিয়ে শুনেছি। স্যারের ছবি তুলেছি আমার মোবাইল ক্যামেরায়। ওই যে বললাম – কত 888sport sign up bonus আর কত গান, কত প্রাণসঞ্চারী ঘটনা আমাকে কত যে ঋদ্ধ করে গিয়েছে, আজ লিখতে গিয়ে ফুরোতে চায় না সেসব। অন্ধের মতো হাতড়ে বেড়াচ্ছি গল্পকথার সুতা। কোথা থেকে গল্প বুনব বুঝে উঠতে পারছি না। বুনতে শুরু করলেও কোথায় গিয়ে থামতে পারব সেটাও তো স্থির জানি না। এ এক বিষম ফ্যাসাদ। শুরু বা শেষ খুঁজে খুঁজে হয়রান হয়ে যাওয়া।

প্রিয় স্যার, বুঝতে কি পারছেন কীরকম এক ব্ল্যাকহোলের ভেতর আমি ঘুরপাক খাচ্ছি? যে-পথেই যাই না কেন, নিকষ কালো অন্ধকারের ভেতর ডুবে যাচ্ছি। হারিয়ে ফেলছি পথ।

এ কেমন পথহীন পথের ভেতর রেখে গেলেন আমাদের?

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্যারের অসুস্থতার আপডেটে আমি নজর রেখেছি। আর মনে মনে আশা রেখেছি, স্যারের জন্য এতশত প্রার্থনা, কী করে বিফল হতে পারে?

নিশ্চয়ই স্যার ফিরে আসবেন আমাদের মাঝে। আসতেই হবে তাঁকে।

এবং আমার আশা ফলবতী হতে শুরু করে। আজফার স্যারের আপডেট দেখতে পাই, স্যারের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। লাইফ সাপোর্ট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আহ! কী শান্তি! অদ্ভুত ভালোলাগায় আমার মন প্রসন্ন হয়ে ওঠে!

স্যারের মতো মেধাবী একজন মানুষকে দেশের এই ক্রান্তিকালে বড় প্রয়োজন।

স্যার, আপনি শতায়ু হোন।

কিন্তু সহসা আমার আশার বনভূমিতে দাবানল লেগে যায়। পুড়তে থাকে মাইলকে মাইল সবুজ-বন। পুড়তে থাকে প্রাণিকুল।

মনজুর স্যার আমাদের সকল প্রার্থনা পেছনে ফেলে চলে গেছেন!

এমন মর্মান্তিক সংবাদও বিশ্বাস করতে হচ্ছে?

সব বোধবুদ্ধি অসাড় হয়ে আসে। হায়! এ জীবনে আর দেখা হবে না আমার প্রিয় লেখকের সঙ্গে! প্রিয় মানুষটির সঙ্গে!

লাইফ সাপোর্ট থেকে বেরিয়ে এসে ফের তিনি ঢুকে পড়লেন অন্য লাইফে! এই অন্য লাইফে প্রবেশের আগেও তিনি ম্যাজিক দেখিয়ে গেলেন!

সিলভিয়া প্লাথের লাইন মনে পড়ে – Dying is an art, like everything else!